SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or

Log in with Google Account

নবম-দশম শ্রেণি (দাখিল) - গার্হস্থ্য বিজ্ঞান - NCTB BOOK
Please, contribute to add content into প্রতিবন্ধী শিশু.
Content

একটি সুস্থ শিশু সবারই কাম্য। পরিবারে এমন কিছু শিশু দেখা যায় যাদের শারীরিক গঠন স্বাভাবিক নয়, হাত বা পা নেই,কানে শোনে না, ফলে কথা বলতে পারে না। অনেকে চোখে দেখে না বা কম দেখে। বুদ্ধিমত্তা কম, ফলে এরা সামাজিক আচরণ ভাব বিনিময় ঠিকমতো করতে পারে না এরাই প্রতিবন্ধী শিশু। এই প্রতিবন্ধী শিশুরা আমাদের সমাজেরই একজন, তাই এদের সম্পর্কে আমাদের জানা দরকার। প্রতিবন্ধী শিশু সম্পর্কে ধারণা থাকলে তাদের প্রতি সবার ইতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি হবে, প্রতিবন্ধী শিশুটিও নিজেকে সবার থেকে আলাদা বা অসহায় মনে করবে না।

প্রতিবন্ধিতার কারণ : বিভিন্ন কারণে একটি শিশু প্রতিবন্ধী হতে পারে যেমন১। জন্মের পূর্বকালীন কারণ ২। শিশু জন্মের সময়ের কারণ, ৩। শিশু জন্মের পরবর্তী কারণ

১। জন্মের পূর্বকালীন কারণ

শিশু যখন মায়ের গর্ভে থাকে তখন মায়ের শারীরিক মানসিক অবস্থা গর্ভের পরিবেশ শিশুর বিকাশকে প্রভাবিত করে। গর্ভাবস্থায় নানা কারণে শিশুর স্বাভাবিক বিকাশ ব্যাহত হতে পারে এবং প্রতিবন্ধী শিশুর জন্ম হতে পারে। কারণগুলো হচ্ছে

  • মায়ের রোগসমূহগর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাসে মা যদি জার্মানহাম, চিকেনপক্স, মাম্পস, যক্ষ্মা, ম্যালেরিয়া, রুবেলা ভাইরাস, এইডস ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত হন তবে গর্ভস্থ শিশুর উপর তার প্রভাব অত্যন্ত ক্ষতিকর হয় । এর ফলে শিশু শারীরিকভাবে বিকলাঙ্গ ও মানসিক প্রতিবন্ধী হতে পারে। এ ছাড়া মায়ের ডায়াবেটিস, উচ্চরক্ত চাপ, কিডনির সমস্যা, থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যা প্রভৃতি শারীরিক অবস্থায় গর্ভস্থ শিশু প্রতিবন্ধী হতে পারে ৷
  • মায়ের অপুষ্টি – গর্ভবর্তী মা যদি দীর্ঘদিন যাবৎ রক্তাল্পতায় ভোগেন, পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার না খান তবে
  • ভ্রুণের গঠনগত বিকলাঙ্গতা দেখা দেয়, মস্তিষ্কের বিকাশ ব্যাহত হয়, ফলে শিশু প্রতিবন্ধী হয় ।
  • ঔষধ গ্রহণ – গর্ভাবস্থায় মা যদি চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ঔষধ খান, তা শিশুর জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হতে পারে। অনেক ঔষধ ভ্রুণের অঙ্গ সৃষ্টিতে বাঁধার সৃষ্টি করে ফলে শিশু যে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধিতা নিয়ে জন্ম গ্রহণ করতে পারে।
  • মায়ের বয়স -গর্ভধারণের সময় মায়ের বয়স কম বা বেশি দুটিই শিশুর জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। অপরিণত বয়সে প্রজনন অঙ্গের বিকাশ সম্পূর্ণ হয় না। তাই অপরিণত বয়সে মা হলে ত্রুটিপূর্ণ শিশু জন্ম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আবার বেশি বয়সে অন্তঃক্ষরা গ্রন্থির স্বাভাবিক কার্যাবলি হ্রাস পায়। তাই ৩৫ বৎসরের পর যে সব মহিলা প্রথম সন্তান জন্ম দেন, সে সব শিশু প্রতিবন্ধী হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।
  • ঘন ঘন খিঁচুনি — গর্ভাবস্থায় মা যদি ঘন ঘন খিঁচুনি রোগে আক্রান্ত হন তবে গর্ভস্থ শিশুর শরীরে অক্সিজেনের অভাব ঘটে ও তার মস্তিষ্কের ক্ষতি করে। ফলে শিশু মানসিক প্রতিবন্ধী হতে পারে ।
  • নিকট আত্মীয়ের মধ্যে বিবাহ – আপন মামাতো, খালাতো, ফুফাতো, চাচাতো ভাইবোন যাদের মধ্যে
  • রক্তের সম্পর্ক আছে তাদের মধ্যে বিবাহ হলে শিশু প্রতিবন্ধী হওয়ার আশঙ্কা থাকে ।
  • তেজস্ক্রিয় পদার্থের প্রবেশ – গর্ভাবস্থায় বিশেষত প্রথম তিন মাস এক্স-রে বা অন্য কোনো ভাবে মায়ের দেহে যদি তেজস্ক্রিয় রশ্মি প্রবেশ করে তবে গর্ভস্থ ভ্রুণের নার্ভতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে শিশু মানসিক প্রতিবন্ধী হয়।
  • মা-বাবার রক্তের Rh উপাদান – মা যদি Rh পজেটিভ আর বাবা যদি Rh নেগেটিভ হয় তা হলে গর্ভস্থ সন্তানের Rh পজেটিভ বা নেগেটিভ হতে পারে। মা ও সন্তানের Rh উপাদানের মধ্যে যদি মিল না থাকে তবে তাকে Rh অসংগতা বা Rh incompatibility বলা হয়। এতে মৃত সন্তান হয়। আর যদি শিশু বেঁচে যায় তাহলে পক্ষাঘাতগ্রস্ত বা মস্তিষ্কের ত্রুটি নিয়ে জন্মায় ।

২। শিশু জন্মের সময়ের কারণসমূহ –

  • শিশুর জন্ম সময়কাল দীর্ঘ হলে, শিশুর গলায় নাড়ি পেঁচানোর কারণে বা শিশু জন্মের পর পরই শ্বাস নিতে অক্ষম হলে অক্সিজেনের স্বল্পতার জন্য মস্তিষ্কের কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে শিশু বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হয়।
  • জন্মের সময় মস্তিষ্কে কোনো আঘাত, যেমন- পড়ে যাওয়া বা মাথায় চাপ লাগা ইত্যাদি প্রতিবন্ধিতার কারণ হতে পারে ।

৩। শিশু জন্মের পরবর্তী কারণসমূহ :

  • নবজাতক যদি জন্ডিসে আক্রান্ত হয় এবং রক্তে যদি বিলিরুবিনের মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায় তবেমস্তিষ্কে কোষের ক্ষতি হয় এবং শিশু মানসিক প্রতিবন্ধী হয় ।
  •  শৈশবে শিশু যদি হঠাৎ করে পরে যায়, মস্তিষ্কে আঘাত পায় বা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয় তবে শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী হওয়ার আশঙ্কা থাকে ।
  • পরিবেশের বিষাক্ত পদার্থ, যেমন- পোকামাকড় ধ্বংস করার রাসায়নিক পদার্থ, ফ্লোরাইড, আর্সেনিক মিশ্রিত পানি ইত্যাদি শিশুর শরীরে প্রবেশ করলে বিষক্রিয়ার সৃষ্টি হয় এবং শিশু প্রতিবন্ধী হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
  • শিশুর শরীরের স্বাভাবিক বৃদ্ধি বিকাশের জন্য বিভিন্ন প্রকার পুষ্টিকর উপাদানের প্রয়োজন হয়। পুষ্টিকর উপাদানের অভাবে শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি বিকাশ ব্যাহত হয় এবং শিশু মানসিক শারীরিক প্রতিবন্ধী হতে পারে

 

কাজশিশুর জন্ম পরবর্তী প্রতিবন্ধিতা রোধে তুমি কীভাবে তোমার এলাকার জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করবে ?

Content added By

 শিশু জন্ম গ্রহণের পর পরই যদি প্রতিবন্ধিতা শনাক্ত করা যায় তবে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে প্রতিবন্ধিতা হ্রাস করা সম্ভব অথবা মারাত্মক প্রতিবন্ধিতা থেকে শিশুকে রক্ষা করা সম্ভব হয়। অতি শৈশবে শিশুর হাঁটা, চলা, বসা, কথাবলা ইত্যাদি বিষয়গুলো যদি যথাযথভাবে না হয় তবে বুঝতে হবে শিশুর মধ্যে প্রতিবন্ধিতার আশঙ্কা আছে। আবার শিশু যদি কোনো কিছু বুঝতে অসুবিধা বোধ করে, অমনোযোগী হয়, অবাঞ্চিত আচরণ করে তাহলেও প্রতিবন্ধিতার আশঙ্কা থাকতে পারে। বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে

শারীরিক প্রতিবন্ধী শনাক্তকরণ বেশির ভাগ শারীরিক প্রতিবন্ধিতা শিশু জন্মের পর চোখে দেখেই বোঝা যায়। আবার কিছু শারীরিক প্রতিবন্ধিতা শিশুর বেড়ে উঠার সাথে সাথে প্ৰকাশ পায়

ঠোঁট কাটা উপরের ঠোঁট ঠিকমতো গঠিত হয় না। ঠোঁটে ফাঁকা থাকে। ফলে শিশুর খাদ্য গ্রহণে কথা বলতে সমস্যা হয়

কাটা তালু মুখের ভিতরের উপরের দিকে তালুর হাড় মাংসপেশি ঠিকমতো গঠিত হয় না। ফলে খাদ্য গ্রহণ, কথা বলা এবং শোনার ক্ষেত্রেও সমস্যা হয়

মুগুর পা একটি বা উভয় পা ভিতর বা পিছন দিকে বাঁকানো থাকে।

 

স্পাইনা বিফিটা মেরুদণ্ডের হাড় (কশেরুকা) ঠিকমতো জোড়া লাগে না। ফলে মেরুরজ্জু পিঠের দিকে থলির মতো ফুলে উঠে। হাঁটাচলায় সমস্যা হয়।

সেরেব্রাল পলসিজন্মের সময় শিশুকে অনেক সময় শিথিল বা নেতানো মনে হয়। বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে অন্য শিশুদের মতো হাত-পা নাড়াচাড়া করতে পারে না। মাথা তোলা, বসা ইত্যাদি খুব ধীরগতিতে হয়। দুধ চুষতে গিলতে অসুবিধা হয়।

শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের অনুপস্থিতি বা গঠন বিকৃতি শিশু শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের অনুপস্থিতি বা অসম্পূর্ণতা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। অর্থাৎ হাত-পা, আঙ্গুল থাকে না বা গঠন অসম্পূর্ণ থাকে। দেহের গঠনও বিকৃত হতে পারে।

বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতা শনাক্তকরণ বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতা হচ্ছে এক ধরনের অক্ষমতা এবং এই অক্ষমতাটি স্থায়ী প্রকৃতির। বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতার কোনো চিকিৎসা নেই। তবে যত্ন শিক্ষণের মাধ্যমে অনেক শিশুর আচরণের উন্নয়ন ঘটানো যায়। তাই আমাদের উচিত দ্রুত শনাক্ত করে শিশুর যথাযথ যত্ন শিক্ষণের ব্যবস্থা করা এবং শিশুর প্রতি সহানুভূতিশীল আচরণ করা। তবে সব বুদ্ধি প্রতিবন্ধীরা একই ধরনের নয়।

নিম্নলিখিত কয়েকটি বৈশিষ্ট্য দেখে সাধারণভাবে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী শিশু শনাক্ত করা যায়

  • হাঁটা, চলা, বসা, কথা বলা ইত্যাদি বিকাশগুলো বয়সের তুলনায় কম হয়
  • কোনো বিষয়ে শিশু মনোযোগ ধরে রাখতে পারে না
  • কোনো নির্দেশনা সহজে বুঝতে পারে না। একই নির্দেশনা বার বার দিতে হয়।
  • শিশু কোনো শিক্ষণ সহজে গ্রহণ করতে পারে না। এমনকি মল-মূত্র ত্যাগের শিখনও সহজে গ্রহণ করতে পারে না
  • সূক্ষ্ম কোনো কাজ করতে পারে না। অবাঞ্চিত আচরণ করে।
  • সমবয়সীদের সাথে মিশতে পারে না। সামাজিক আচরণ ঠিকমতো প্রদর্শন করতে পারে না
  • ঘন ঘন অজ্ঞান হয়ে যায় বা খিঁচুনি হয়

বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত কিছু রোগ যা দেখে বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতা সহজে শনাক্ত করা যায়

মাইক্রোসেফালি মাথার আকৃতি অস্বাভাবিক ছোট হয়। এরা গুরুতর বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হয়

হাইড্রোসেফালি মাথার ভেতরে তরল পদার্থ জমে থাকে ফলে মাথার আকৃতি অস্বাভাবিক বড় হয়। এরাও গুরুতর বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হয়

ডাউন সিন্ড্রোম গোলাকার মুখোমণ্ডল, তীর্যক চোখ, চোখের পাতা পুরু হয়। জন্মের সময় শিশু দুর্বল শিথিল থাকে। হাত, পা ঘাড় খাটো হয়। উপুড় হতে, বসতে হাঁটতে দেরি হয় এবং এরা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হয়।

ক্রিটিনিজম শারীরিক মানসিক বিকাশ বিলম্ব হয়। শিশুর দেহে থাইরয়েড হরমোন উৎপাদন কম হয়। ফলে যে লক্ষণগুলো প্রকাশ পায় - শিশু খুব ধীরে বেড়ে উঠে। কপাল ছোট, মুখমণ্ডল হাত-পা ফোলা এবং বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতা থাকে।

কাজ : প্রতিবন্ধিতা দ্রুত শনাক্তকরণের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে লেখ

 

Content added By

 চোখের ও কানের নিম্নলিখিত অবস্থা দেখা দিলে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। প্রতিবন্ধিতার ধরন শনাক্ত এবং পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

দৃষ্টি প্রতিবন্ধিতা শনাক্তকরণ

  • চোখের পাতা লাল হওয়া, ফুলে যাওয়া। চোখের পাতার কিনারে শুষ্ক আস্তরণ।
  • চোখ থেকে তরল পদার্থ বের হওয়া ।
  • ঘন ঘন চোখ রগরানো ও চোখ কুঁচকানো।
  • বর্ণ চিনতে ভুল করা। বৰ্ণ উল্টা দেখা।
  • লেখার সময় অসম ফাঁক দেওয়া, সারি সোজা রাখতে না পারা।
  • কাছের বা দূরের জিনিস দেখতে সমস্যা হওয়া বা দেখতে না পারা ।

শ্রবণ প্রতিবন্ধিতা শনাক্তকরণ -

  • কানের গঠনগত ত্রুটি বা বিকৃতি থাকলে কান পাকা রোগ ইত্যাদি সমস্যা থাকা ।
  • উচ্চারণের ক্ষেত্রে অস্পষ্টতা বা ব্যঞ্জনবর্ণ উচ্চারণের অসুবিধা বা কথা কম বলা ৷
  • কিছু শোনার সময় কানে হাত দিয়ে শোনার চেষ্টা করা। রেডিও, টিভি শোনার সময় শব্দ বাড়িয়ে দেওয়া বা কাছে গিয়ে শোনা।
  • কোনো প্রশ্ন বার বার করা বা এক প্রশ্নের অন্য উত্তর দেওয়া । কথা না বলে হাত ও মুখ ভঙ্গিমার মাধ্যমে বা ইশারায় ভাব বিনিময় করা।

প্রতিবন্ধিতা প্রতিরোধ : প্রতিবন্ধিতা প্রতিরোধ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রতিবন্ধী শিশু যাতে জন্মগ্রহণ না করে এবং শিশু জন্মগ্রহণের পর যাতে প্রতিবন্ধিতার শিকার না হয় সে দিকে সবার সচেতনতা প্রয়োজন। এই জন্য যা করণীয় তা হচ্ছে

গর্ভকালীন সময় পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ – গর্ভকালীন মাকে পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার খেতে দেওয়া। পুষ্টিকর খাবার না খেলে অনেক ক্ষেত্রে শিশু পূর্ণাঙ্গ সময়ের আগেই জন্মগ্রহণ করে অথবা শিশু কম ওজনের হয়। এসব শিশু শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী হতে পারে। প্রতিবন্ধিতা রোধে গর্ভকালীন প্রথম মাসগুলোর পুষ্টি বেশি গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভকালীন আয়োডিনযুক্ত লবণ গ্রহণ শিশুর মানসিক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধিতা প্রতিরোধ করে।

ঔষধ গ্রহণে সতর্কতা – গর্ভাবস্থায় ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ঔষধ গ্রহণ ও মাদক, সিগারেট থেকে বিরত

থাকলে কিছু কিছু জন্মত্রুটি এবং মানসিক বা বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতা প্রতিরোধ করা সম্ভব।

প্রতিষেধক টিকা গ্রহণ – বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতা রোধ করতে হলে গর্ভধারণের আগে রুবেলা ভাইরাস বা জার্মান হাম প্রতিরোধক টিকা নিতে হবে। ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সের সকল মহিলাকে ধনুষ্টংকার থেকে রক্ষার জন্য টিটি টিকা দিতে হবে।

শিশু কিশোরকে পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার দেওয়া – ভিটামিন ‘এ সমৃদ্ধ খাবারের অভাবে শিশুদের মধ্যে দৃষ্টি - প্রতিবন্ধিতা দেখা দেয়। শিশুদের গাঢ় সবুজ রঙের শাকসবজি, হলুদ ফলমূল খাওয়ালে এই প্রতিবন্ধিতা প্রতিরোধ করা যায়। জন্মগ্রহণের পর পরই মায়ের প্রথম দুধ শিশুকে দিতে হবে এই দুধে কলেস্ট্রাম নামক হলুদ বর্ণের পদার্থ থাকে, যা শিশুর রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বৃদ্ধি করে

স্বাস্থ্যকর পরিবেশ রক্ষা- ঘন বসতি অস্বাস্থ্যকর পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা গুরুতর প্রতিবন্ধিতা সৃষ্টির

অন্যতম কারণ। তাই স্বাস্থ্যকর পরিবেশ রক্ষার চেষ্টা করতে হবে

বেশি বয়সে সন্তান ধারণ রোধবেশি বয়সে সন্তান গ্রহণ বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতার অন্যতম কারণ। তাই বেশি বয়সে সন্তান ধারণ নিরুৎসাহিত করতে হবে

রক্তের সম্পর্কের মধ্যে বিবাহ রোধ ঘনিষ্ঠ রক্তের সম্পর্কের মধ্যে বিবাহ বন্ধ করতে পারলে সব ধরনের প্রতিবন্ধিতা অনেকাংশে রোধ করা সম্ভব

আঘাত রোগ সংক্রমণে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ শিশুর কানে, চোখে, মাথায় আঘাত বা রোগ সংক্রমণ হওয়ার সাথে সাথে প্রতিকারের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে

রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহারে সাবধানতা অবলম্বন -পোকামাকড় ধ্বংস করার জন্য যেসব রাসায়নিক পদার্থ - ব্যবহার করা হয় তা স্বাস্থ্য সমস্যার অন্যতম কারণ। সমাজের অনেক লোকই বিভিন্ন ঝুঁকি পূর্বসতর্কতামূলক ধারণা না নিয়েই সরাসরি জমিতে রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করে পোকামাকড় নিধন করে। এর ফলে অনেকে দৃষ্টিহীন, পক্ষাঘাতগ্রস্ততার শিকার হয়

বিপজ্জনক কর্ম পরিবেশ আমাদের দেশের অনেক শিশু বিপজ্জনক পরিবেশে কাজ করে। যদিও দেশের শ্রম আইনে তা নিষিদ্ধ। কিন্তু দরিদ্রতার কারণে শিশুরা ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত হয়, ফলে আগুনে পুড়ে যাওয়া, অঙ্গহানি, দৃষ্টিহানি হয়। মেরুদণ্ডে আঘাত বা মাথায় আঘাত পেয়ে প্রতিবন্ধিতার শিকার হয়। আমাদের দেশে অনেক শিশু ধান মাড়াইয়ের সময় ধান ছিটে চোখে আঘাতপ্রাপ্ত হয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধিতার শিকার হয়।

কাজ : প্রতিবন্ধিতা রোধে সমাজ সচেতনতা বৃদ্ধিতে তোমাদের করণীয় সম্পর্কে ক্লাশে আলোচনা কর

Content added By